সাধারণভাবে বলতে গেলে ই-কমার্স বিজনেস হলো একটি প্রতিষ্ঠানে ইন্টারনেট ব্যবহার করে কিভাবে একটি সুনির্দিষ্ট বাজারে পণ্য বা সেবার বিনিময়ে অর্থ বা সম্পদ তৈরি করবে তার চূড়ান্ত পরিকল্পনা। আরেকটু স্পষ্ট করে বলতে গেলে ই-কমার্স বিজনেস হলো একটি পরিকল্পনা যার মাধ্যমে ইন্টারনেট বা অনলাইন প্রক্রিয়ায় প্রকৃত ক্রেতাদের ভ্যালু দেওয়ার মাধ্যমে মুনাফা অর্জনের চেষ্টা করা হয়।
ই-কমার্স বা ই-বিজনেস মডেল বলতে একটি ফার্ম বা প্রতিষ্ঠান কীভাবে সংগঠন তৈরি করে, কীভাবে পণ্য সরবরাহ করে এবং কীভাবে ভ্যালু আয়ত্ব করে তার একটি গাইডলাইনকে বোঝায়।
ই-কমার্স বিজনেস মডেলকে এক কথায় ই-বিজনেসের আর্টও বলা যায়। নিচের চিত্রে একটি ই-কমার্স বিজনেস মডেলের নমুনা উপস্থাপন করা হলো—
উপরের আলোচনা থেকে সহজেই বলা যায় যে, ই-কমার্স বিজনেস মডেল হলো এমন এক ধরনের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা যার মাধ্যমে ক্রেতাদের ভ্যালু প্রদানের মাধ্যমে মুনাফা অর্জনের চেষ্টা করা হয়।
Business Model) ই-কমার্স-এর প্রতি বাংলাদেশের মানুষও ইদানিং আগ্রহী হয়ে উঠেছে। দারাজ, রকমারি, পিকাবো, অ্যামাজন ইত্যাদির সাথে বাংলাদেশের মানুষ আজ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। পর্যায়ক্রমে ই-কমার্স-এর সফলতা পরিলক্ষিত হচ্ছে বিশ্বজুড়েই।
যেকোনো ব্যবসায় পরিচালনায় একটি সুনির্দিষ্ট কাঠামো থাকা প্রয়োজন। আর ই-বিজনেস কাঠামো হলো একটি সুনির্দিষ্ট দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। নিচে ই-কমার্স বিজনেসের মডেলসমূহ উপস্থাপন করে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো :
১. ব্যবসায় থেকে ব্যবসায় (Business to business-B2B) : এটি এমন একটি মডেল যেখানে একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান অন্য আরেকটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের কাছে পণ্য বা সেবা বিক্রি করে। আলিবাবা এবং ইন্ডিয়া মার্টের মতো পাইকারি বিক্রেতাগুলো এরূপ B2B পদ্ধতিতে পণ্য বা সেবা বিক্রি করে থাকে। নিচের চিত্রে B2B মডেলটি উপস্থাপন করা হলো-
২. ব্যবসায় থেকে ভোক্তা (Business to consumer B2C) : এটা এমন এক ধরনের ব্যবসায় মডেল যেখানে একটি প্রতিষ্ঠান তার পণ্য বা সেবাসমূহ সরাসরি গ্রাহকের কাছে বিক্রি করে। এ মডেলের সবচেয়ে ভালো দিক হলো— ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত বিভিন্ন পণ্যের সমাহার থেকে ক্রেতারা তাদের পছন্দের পণ্যটি বাছাই করতে পারে এবং অর্ডার দিতে পারে। ওয়েবসাইটটি অত্যন্ত সহজভাবে ক্রেতাদের অর্ডারের বিষয়টি ই- মেইলের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানকে জানিয়ে দেয় । নিচে এ ধরনের B2C মডেলটির নমুনা চিত্রে তুলে ধরা হলো :
৩. ভোক্তা থেকে ভোক্তা (Consumer to consumer-C2C) : ই-কমার্স ওয়েবসাইটের মাধ্যমে দু'জন ভোক্তার মধ্যে লেনদেন সহজতর করার জন্য C2C মডেলটি অত্যন্ত কার্যকর। সাধারণত অ্যাপার্টমেন্ট, গাড়ি, মোটরবাইক ইত্যাদি পণ্যের ক্ষেত্রে একজন ক্রেতা আরেকজন ক্রেতাকে সহযোগিতা করে। Bikroy.com এ ধরনের মডেল অনুসরণ করে। নিচের চিত্রে এরূপ C2C মডেলের একটি নমুনা তুলে ধরা হলো :
৪. ভোক্তা থেকে ব্যবসায় (Consumer to business-C2B) : ভোক্তারা কোনো ধরনের বিজনেস সাইট থেকে পণ্য কিনে না। বরং ভোক্তারা নিজেরাই অন্যান্য ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের কাছে পণ্য বা সেবা বিক্রি করে । এটিই হলো C2B মডেলের মূলকথা। নিচের চিত্রে এ ধরনের মডেলটি তুলে ধরা হলো :
৫. ব্যবসায় থেকে সরকার ( Business to government-B2G) : এ মডেলটি B2B মডেলের বিকল্প হিসেবে কাজ করে। এ ধরনের ওয়েবসাইটগুলো সরকার বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায় সংগঠনের সাথে তথ্য বাণিজ্য এবং বিনিময় করতে ব্যবহার করে। B2G মডেল সাধারণত সরকার কর্তৃক স্বীকৃত ব্যবসায় মডেল।
৬. সরকার থেকে ব্যবসায় ( Government to business - G2B) : একটি দেশের সরকার বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংস্থাগুলোর নিকটবর্তী হওয়ার জন্য এ ধরনের মডেল ওয়েবসাইটগুলো ব্যবহার করে থাকে। এ জাতীয় ওয়েবসাইট বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ তথা নিলাম, দরপত্র ইত্যাদির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
৭. সরকার থেকে সিটিজেন বা নাগরিক (Government to citizen-G2C) : সরকার তার দেশের বিভিন্ন এলাকার নাগরিকদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করার জন্য G2C মডেল ব্যবহার করে।
৮. সরকার থেকে সরকার (Government to Government G2G) : সরকার অন্য একটি দেশের সরকারের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করার জন্য G2G মডেল ব্যবহার করে।
Read more